ছবিঃ টোকিও বাংলা নিউজ
এক.
তিনুর মন্তব্য শুনে চমকে উঠলো খালেদ।
উদাসকণ্ঠে ও বললো, ‘যদি দূরে কোথাও চলে যেতে পারতাম, যেখানে থাকবে শুধু প্রকৃতি আর প্রকৃতি। দিগন্ত জুড়ে শুধু সবুজ, পাহাড়, পাখি আর অবারিত নীল আকাশ। সেখানে এই সভ্যতার জটিলসব মানুষের দরকার নেই। বিদ্যুৎ, গাড়ি-বাড়ি, কম্পিউটার, ইন্টারনেট এসবের কিচ্ছু দরকার নেই। সবকিছু থেকে দূরে কোথাও যেতে পারলে ভাল হতো। প্রকৃতিকে সঙ্গী করে যদি ঘর বাঁধতে পারতাম! হোক না সে আদিম যুগ। আফসোস নেই। পাহাড়-পর্বত আর সবুজ প্রকৃতির সঙ্গে মিতালি করে গাছে গাছে থাকতে হলেও মন্দ হতো না। তবু তো জটিলতা থেকে মুক্ত বিহঙ্গে দাঁড়াতে পারতাম!’
ঠিক এমন ভাবনাটাই ক’দিন ধরে ভাবছিল খালেদ। হুবহু একই ভাবনা কী করে ওর মধ্যে এলো! একি টেলিপ্যাথি? নাকি কঠিন জ্বর থেকে বেঁচে উঠার উপলব্ধি? ঠিক মেলাতে পারলো না খালেদ। তবে নিজের মনের কথাটা অবিকল তিনুর মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসবে ভাবতে পারেনি।
ইদানিং অদ্ভুৎ একটা ভাইরাস জ্বর ছড়িয়ে পড়েছে। যাকে ধরছে তার জীবনের সাধ মিটিয়ে দিচ্ছে। জ্বর হলে কতো ওষুধ রয়েছে, খেলেই অনেকটা ভাল হয়। কিন্তু এই জ্বরে কিছুই হয় না। কোন ওষুধ কাজ করে না। খালেদ একসঙ্গে তিনটা করে নাপা খেয়েছে। কোন কাজও হয়নি, প্রভাবও পড়েনি। এমনকি আর কোন ওষুধেও কাজ হয়নি। ডাক্তাররা ব্যর্থ। পুরো সাতদিন বিছানায় শরীরের উপর জীবন আর মৃত্যু পাঞ্জা লড়েছে। কতোবার জ্ঞান হারাতে হয়েছে, কোমায় পর্যন্ত চলে যেতে হয়েছে কয়েকবার। সেইসঙ্গে যন্ত্রণা! উহ্ সেকি ভোলা যায়! যমের হাতে পড়া। খালেদ অনেক জ্বর দেখেছে, কিন্তু এ জ্বর লাফিয়ে এক শ’ চার ডিগ্রিতে দাঁড়িয়ে থাকে এমন কখনও হয়নি। ঠিক একই সময় তিনুও এই জ্বরে পড়েছিল। এখন সুস্থ’র দিকে। তবে অসম্ভব রকমের ঘাম আর ঘুম অস্থির করে ফেলছে। কিন্তু, অফিস তো আর এসব মানবে না। কতোদিন আর আর ছুটি মেলে? মেলেনা। তাই অফিসে এসে খালেদেরও মনে হচ্ছিল সব কিছু থেকে দূরে কোথাও হারিয়ে যেতে পারলে মন্দ হতো না।
- আশ্চর্য! আপনারও এমন মনে হচ্ছে! এতো মিল হলো কেমন করে? বললো খালেদ। জবাবে রক্তশূন্য ফ্যাকাশে মুখটা তুলে হাসলো তিনু।
- জানি না। তারপর চুপ। কোন কথা নেই। কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে থাকলো ও। খালেদও নিজের কম্পিউটারে মনোযোগ দিলো। হঠাৎ মাথায় হাত চেপে থেমে পড়লো তিনু উহ্ আর পারি না, মাথাটা একেবারে ঘুরছে, চোখে ধাধা দেখছি।
- অসুস্থ’র পর এটা হবেই। আমারও হচ্ছে। কিন্তু তবু কাজগুলো করছি।
নিরবতা। খালেদের বাম পাশে আশফাক সাহের বসেন, ডাটা এন্ট্রির কাজে বিশেষজ্ঞ। তিনি এখনও আসেননি। ডানে তিনু, আর ওর ডানে বসে দীপালি। দীপালি একমনে ডাটা এন্ট্রি করছে। খালেদ আর তিনুই মাঝে মাঝে কথা বলছে কাজের ফাঁকে।
- খালেদ ভাই
- হ্যাঁ বলুন
- আপনাদের সঙ্গে বোধহয় আর বেশীদিন থাকছি না। আমার একটুও সহ্য হচ্ছে না। এতো বাজে জায়গা দেখিনি, আর হয়তো দেখবোও না। যতো তাড়াতাড়ি পারি বিদায় হবো।
- আমার কাছেও তো অসহ্য মনে হচ্ছে। কিন্তু কি করবো? উপায় তো দেখছি না।
- আপনাদের গোলাপ নামের সাহেবটা না অসহ্য হয়ে উঠেছে। এ-তো নোংরা আর কুটিল! জিলিপির প্যাঁচে ভরা। তার ছায়া দেখলেই শরীরটা রি রি করে ওঠে। বস আপা যে কেন এ রকম একটা বাজে লোককে এখানে বসিয়ে রেখেছে বুঝিনা। এর অত্যাচারে কোন ভাল মানুষ কখনই থাকতে পারবে না।
- পারেওনি কেউ। আমার-আপনার আগে অনেকেই চলে গেছে এরই কারণে। আমাদেরও হয়তো যেতে হবে।
যে গোলাপ সাহেবটাকে নিয়ে কথা হাচ্ছিল সে আর কেউ নয়, সে হলো খালেদেরই এক সময়ের কর্মী। অনেক জুনিয়র। খালেদ এই গোলাপকে প্রাণের চেয়েও বেশী ভালবাসতো। এখনও বাসে অতীত এবং পারিবারিক সম্পর্কের কারণে। একসময় একসঙ্গে কতো ঘাত-প্রতিঘাত পেরোনো হয়েছে, কতো দুঃখ-কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে, এক পাতে এক বিছানায় কতো সময় পার হয়েছে তার হিসেব মেলানো কঠিন। খালেদের নির্দেশ মতো কতো কাজ করেছে গোলাপ। তারপর সময়ের ফেরে কর্মসংস্থানের জন্য এক-একজন এক-একদিকে চলে গেছে। খালেদ চলে গেছে বগুড়া। গোলাপ একটা এনজিওতে যুক্ত হয়ে মাঠকর্মী হিসেবে পোস্টিং পেয়েছে সুদূর সন্দ্বীপ। সেখানেই এই গোলাপটি কাটিয়েছে বছরের পর বছর। কষ্টের সীমা থাকেনি। কতোদিন খালেদের কাছে চিঠি লিখেছে আমাকে বাঁচান, আমাকে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে রক্ষা করুন, আর পারছি না। কিন্তু খালেদ কি করবে? সে নিজেই ছিল টলটলায়মান অবস্থায়। তাই কিছু করতে পারেনি। কিন্তু গোলাপের আকূতি বার বার ব্যাকূল করেছে খালেদকে। সেই গোলাপ এখন হেড অফিসে। এখন নামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাহেব।
খালেদের এই অফিসে ঢোকার কিছু কারণ ছিল। ঢাকার একটা বহুল প্রচারিত মিডিয়ায় কাজ করছিল। অভ্যন্তরিণ কিছু বিষয়ে হঠাৎ করেই সেখানে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছিল। বেতন আটকে ছিল দু’মাসের। খালেদ জানতো এটা সাময়িক। ঠিক এই সময় অর্থাৎ কম করেও দেড় যুগ পর গোলাপের সঙ্গে দেখা। একে-অপরের কূশল বিনিময়ের পর পেশাগত অবস্থা নিয়ে কথা হয়। তখন খালেদের খবরটা জানতে পারে ও।
- খালেদ ভাই আপনি আমার অত্যন্ত শ্রদ্ধাতুল্য। আমার অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয় অনিশ্চিত অবস্থায় থাকার দিন শেষ করতে হবে। এই বয়সে আর এটা চলে না। আপনি বরং আমাদের প্রতিষ্ঠানে যোগ দিন। এখানে অন্তত এরকম কোন অনিশ্চিত অবস্থা হবে না কোনদিন। স্যালারি ভাল, প্রভিডেন্ট ফান্ড-ইনক্রিমেন্ট আছে, বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা আছে, কাজও এমন কিছুই নয়, সারাদিনে বড় জোর এক-দেড় পৃষ্ঠা কম্পিউটারের কাজ। আপনি অগাধ সময় পাবেন, রিলাক্স করতে পারবেন, নিশ্চিত জীবন নিয়ে ভবিষ্যত গড়তে পারবেন। বেরিয়ে আসুন অনিশ্চিত অবস্থান থেকে। বলেছিল গোলাপ।
- তোমার ওখানে নেওয়া সম্ভব?
- হ্যাঁ সম্ভব। একটু চেষ্টা করলেই হবে। আমার বস আপাকে যা বলবো তিনি তাই-ই শুনবেন। আমি যদি আপনার জন্য কোন উপকার করতে পারি তাহলে সারা জীবন ধন্য হয়ে থাকবো।
- ঠিক আছে, ঠিক করো একটু ভেবে বলেছিল খালেদ। গোলাপ যদিও বলেছিল, আমি যে জায়গার জন্য চেষ্টা করবো, সেটার দায়িত্বে মানে বস আমিই। কাজেই অসুবিধা হবে না, আপনার সম্মান আমি রাখতে পারবো বলে বিশ্বাস করি।
তখন চলে এসেছিল খালেদ। প্রথম প্রথম গোলাপের প্রতি একটা গভীর কৃতজ্ঞতাবোধ কাজ করছিল খালেদের। কিন্তু দিন যতো যেতে লাগলো ততো অন্য রূপে বেরিয়ে আসতে থাকলো। ও যেখানে খালেদকে ‘বড়ভাই’ ‘শ্রদ্ধেয়’ এবং মিডিয়ার ‘অনেক বড় পদ’ থেকে আসা বলে সম্মানের জায়গাটিকে গুরুত্ব দেবে বলে অঙ্গীকার করেছিল, অবশেষে দেখা গেল সেই খালেদকে সে নিজের পিয়নের মতো ব্যবহার করছে, বস স্টাইলে আচরণ করছে। তারপরেও খালেদ ধৈর্য ধরছিল। কারণ আসল বস আপা এবং এই প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য-উদ্দেশ্যটা প্রচ- ভাল লেগেছিল খালেদের। দেশের তৃণমূল মানুষ-সমাজ এবং এর ভবিষ্যৎ বিষয়ে খালেদ যা চায় এই প্রতিষ্ঠানও তাই-ই চায়। সাম্যবাদ-সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্রায়ন, ধর্মনিরপেক্ষতা, রাষ্ট্রের সকল কর্মচারীকে জনগণের কাছে জবাবদিহিতার জায়গায় নিয়ে যাওয়া, বৈষম্যের সমাজ ভাঙা, স্বৈরতন্ত্র-একনায়কতন্ত্র-হাইয়ারআরকি-এর বিলুপ্তি ঘটানো, যৌথ ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা, নিজেরা সেই চর্চা করা এবং গড়ে ওঠা ইত্যাদি চমৎকার কথাগুলো খালেদকে দারুণভাবে আকর্ষণ করেছে। এসব ব্যাপারে বস আপা সাচ্ছা একজন মানুষ হিসেবে নিজের প্রকাশ ঘটিয়েছেন। কিন্তু গোলাপ কেন উল্টো ধারায় চলছিল সেটাই স্পষ্ট হচ্ছিল না ওর কাছে। ও এতো বেশী দাপটের সঙ্গে চলছে, যা খুশী তাই-ই করছে অনৈতিকভাবে, অথচ বস আপা তাকে কিছুই বলছেন না। এটাই অবাক করছিল খালেদকে। আবার ভেবেছে, যে গোলাপকে নিজে হাতে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলায় ভূমিকা রেখেছে খালেদ নিজে, সেই গোলাপ অন্যরকম মানুষ হয় কি করে! কার দোষে? সঙ্গ দোষ? জবাব মেলাতে পারছিল না।
প্রথম যখন খালেদ এই নতুন কর্মস্থলে এলো তখন রুমটাতে মোট ৫ জন ছিল। খালেদ, আশফাক সাহেব, নীলাদি এবং গোলাপ। তিনু আর দীপালি তখনও আসেনি। ওরা এসেছিল আরও পরে। ওদের আগে মিনা নামে একটি মেয়ে এসেছিল। কিন্তু থাকতে পারেনি। আসলে প্রতিবছর একজন করে এসেছে কিন্তু সংখ্যা বাড়েনি। কারণ একদিকে এসেছে, আরেকদিকে চলে গেছে। বস আপা এজন্য নিজেই এ বিভাগটির নাম দিয়েছেন ‘উদয়ন বিদায়ন’।
গোলাপ ছাড়া আশফাক সাহেবটাও বেশ জটিল। আচার-আচরণ অশোভন। কাজেই খালেদরা তাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে। নীলাদি খুব ভাল মানুষ, উচ্চ শিক্ষিত। তার স্বামী দেশের বিখ্যাত চিত্রশিল্পী। তিনি নিজেও চিত্রশিল্পী। বস আপার সঙ্গে বিশেষ পরিচিতি ছিল। বস আপাই মোটা অঙ্কের বেতনে এখানে নিয়ে আসেন নীলাদিকে। তারপর এই নীলাদিকে প্রথমে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল স্পেশাল রুমে- যেটাতে এসি আছে এবং গোলাপ বসে। অফিসের এসি গাড়িতে করেই নীলাদিকে প্রথম প্রথম কেসস্টাডি আনার জন্য বাইরে পাঠানো হতো। কিন্তু আস্তে আস্তে গোলাপ এমন সব কায়দা-কানুন করলো যে তাকে ওই রুম থেকে বের করে খালেদদের প্রচ- গরমের রুমে বসার ব্যবস্থা হলো। এসি গাড়িতে করে কেসস্টাডি আনতে যাওয়া বন্ধ হলো। এরপর শুরু হলো মেন্টাল টর্চার। খোদ বস আপার লোককেই গোলাপ নাকানি-চুবানি খাইয়ে ফেললো।
এই নীলাদি খালেদকে উদ্দেশ্য করে একদিন বলেছিল, ‘আপনার এই গোলাপ বন্ধুটি না একেবারে নীচু শ্রেণীর।’ প্রথম প্রথম খালেদ এ ধরনের কথা একেবারেই শুনতে রাজী ছিল না, বিশ্বাস করা তো দূরে থাক। কারণ গোলাপ খােেলদের নিজের হাতের তৈরি, পবিত্র মানুষ হবারই দীক্ষা পেয়েছে ও। যদিও দীর্ঘ দেড় যুগ ও আলাদা নিজের মতো ছিল। তাতেও তো সমস্যা হবার কথা নয়! তাছাড়া এই দেড় যুগ যেখানে ছিল সেটাও তো খালেদের চেতনাতুল্য জায়গাই। বস আপার সংগঠনে থাকা মানে সে মানুষ ভাল থেকে ভাল, পবিত্র থেকে আরও পবিত্র হবে। সুতরাং গোলাপের খারাপ হবার প্রশ্নই ওঠে না। নীলাদি হয়তো নিজের অপছন্দের বিষয় বিবেচনা করে এমন বলছেন। নীলাদি ধীরে ধীরে আরও অনেক কথা বলেছিল।
- আপনার গোলাপ সাহেব শুধু নীচ-ই না, অত্যন্ত নীচু স্বভাবেরও। সেইসঙ্গে ক্রিমিন্যাল, মিথ্যুক এবং নির্যাতক। জ্ঞান-গরিমাও কম, জানেও না তেমন কিছু। বস হিসেবে থাকতে হলে তো যোগ্যতা থাকতে হয়। শিক্ষিত হতে হয়। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে না হলেও জ্ঞানের দিক থেকে যোগ্যতা থাকতে হয়। ব্যবহার-আচার-আচরণ-সংস্কৃতিগত যোগ্যতা থাকতে হয়। শারীরিকভাবেও যোগ্যতা থাকতে হয়, অন্তত বসের মতো দক্ষতা-যোগ্যতা থাকতেই হয়। এর কোনটাই নেই তার। কিন্তু ভাব দেখায় সবজান্তা। এই ধরনের অযোগ্য লোকেরা সবসময়ই যোগ্যদের প্রতি ঈর্ষায় থাকে, যোগ্যকে প্রতিপক্ষ বা শত্রু ভাবে। আপনার বন্ধুটিও তাই। সে তারচেয়ে শিক্ষিত-অভিজ্ঞ মানুষকে কখনই ভাল চোখে দেখে না, আপনাকেও দেখবে না।
কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার বলেন, তার চরিত্রও সুবিধের নয়। নিজের স্ত্রী সম্পর্কে সে কি করে মন্তব্য
করে যেন ‘কাইল্যানি’ দিয়ে কি কাজ হয়?
নীলাদি কেন যেন খালেদকে খুব পছন্দ করে ফেলেছিল। বিশ্বাসও করেছিল। সে কারনে খালেদ গোলাপের ঘনিষ্ঠ জানা সত্ত্বেও অবলীলায় সব বলে ফেলে।
- আপনি কি জানেন যৌথ চেতনাবোধ, সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠা, শোষণমুক্তি এগুলো সব মিথ্যা কথা। সাম্রাজ্যবাদবিরোধীতার নামে সাম্রাজ্যবাদের এজেন্ট হিসেবে কাজ করছে আমাদের প্রতিষ্ঠান?
- কি বলেন? কিভাবে?
- আপনি তো দেখছেন, কম্পোজও করছেন। বাংলাদেশের কোন্ জায়গায় কতোজন সাম্যবাদী চেতনায় দীক্ষিত, কতোজন সংগঠিত, সংগঠিত মানুষগুলোর হাতে কতো টাকা আছে তার পুরো ডাটা-তথ্য ডোনারদের মাধ্যমে সাম্রাজ্যবাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।
- কীভাবে?
- ডোনারদের হাতে তুলে দেবার জন্য যে ডাটাশিট তৈরি করছেন, তাতে এসব তথ্যগুলো থাকছে। আর এই ডাটাশিটটাই চলে যাচ্ছে সাম্রাজ্যবাদীদের হাতে। তাই তারা ওয়াশিংটনে বসে বলে দিতে পারবে বাংলাদেশের কোথায় কি হচ্ছে, কতোজন মানুষ কম্যুনিজমের চিন্তা করছে, কতোজন মৌলবাদবিরোধীতার চিন্তা করছে, কতোজন এ জন্য লড়াই-সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত এবং তাদের হাতে এজন্য কতো টাকা সঞ্চয় এবং অন্যান্য শক্তি আছে। সব তারা চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছে। আর আমরা সেই দেখার তথ্যগুলো তাদেরকে সরবরাহ করছি। এর পরিণতি কি হতে পারে ভাবতে পারেন?
হা হয়ে গিয়েছিল খালেদ। সত্যিই তো। এভাবে কখনও ভাবেনি ও। তখনই মনে হয়েছিল সাম্রাজ্যবাদ কেন বামপন্থী আদর্শের একটি প্রতিষ্ঠানকে ডোনেট করে? রহস্যটা কোথায়?
চলবে........
ইয়াসমিন হোসেন
ফ্রিল্যান্স লেখক
আর এ