অন্তহীন
শীতাতপনিয়ন্ত্রিত গাড়ির জানালায় জমা তিরতির করা বিন্দুবিন্দু পানির আড়ালে ফুটপাথে দাঁড়িয়ে থাকা ভদ্রমহিলার দিকে চোখ পড়লেও, চোখ থেকে মস্তিষ্কে সিগন্যাল যেতে অনেকটা সময় নিলো যে বালিকা বা ঠিক করে বললে, ওই ভদ্রমহিলা আমার স্ত্রী বর্ষা। ওর অফিস আশেপাশেই। কাজেই ছুটির সময় ওর এখানে দাঁড়িয়ে থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়। অফিস থেকে পাওয়া আমার গাড়িতে আমি একাই আছি, চাইলেই ওকে ডেকে নেওয়া যায়। কিন্তু চাইলেই অনেক কিছু করা যায় না, অন্তত আমাদের মাঝের সেই সম্পর্ক হারিয়ে গেছে। তাই তাকিয়ে থাকতে থাকতেই জ্যাম ঠেলে ভুশ করে আমার গাড়িটা সামনে চলে গেল। ওড়না দিয়ে ঘাম মুছতে চাওয়া বালিকাকে আমার আর ডেকে নেওয়া হলো না।
শুক্রবার, ১৫ এপ্রিল ২০২২, ০৯:৪২
আমার প্রথম প্রেম (পর্ব-১)
আমি যখন প্রথম প্রেমে পড়ি তখন আমার বয়স ষোল, কলেজে পা দিয়েছি সবে। ভয়াবহ রকমের প্রেম। তাকে দেখলেই আমার বুকের ভিতর রণঢাক বেজে ওঠে, হৃৎস্পন্দন অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যায়। আমি হেবলার মত তার দিকে তাকিয়ে থাকি, মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে দেখি। তিনি সীমান্ত ভাই। দেখতে সুন্দর, সুদর্শন। আমি নিশ্চিত এক হাজার পুরুষের ভীড়েও তার দিকে আপনার চোখ আগে যাবে। সীমান্ত ভাইয়ের প্রতি আমার এই গলা সমান হাবুডুবু খাওয়া প্রেমের শুরু হলো নীরা আপার গায়ে হলুদের দিন থেকে। নীরা আপা সীমান্ত ভাইয়ের বোন। আমরা
বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল ২০২২, ১৭:১৭
সুখ (পর্ব-২)
অনবরত ফোন দিয়ে যাচ্ছে রিসাদ। অফিসের সামনে দাড়িয়ে আছে এই অপেক্ষায় যে কখন দীপ্তি অফিসে আসবে। দীপ্তি আদৌও আসবে কিনা তা নিয়েও বে
বৃহস্পতিবার, ১৪ এপ্রিল ২০২২, ০৪:১০
সুখ (পর্ব-১)
এক হাতে প্রেগন্যান্সির পজিটিভ রিপোর্ট, আর অন্য হাতে ডিভোর্স পেপার নিয়ে বসে আছে দীপ্তি। কিছুক্ষণ আগেই দুটো পেয়েছে। রিপোর্টটা হাতে নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় খুব হাসিখুশি ছিল দীপ্তি, ভেবেছিলো এবার হয়তো সবটা আগের মতো হয়ে যাবে। কিন্তু বাড়ি ফিরতেই রিসাদ ডিভোর্স পেপার রেখে যায়,তা`ও আবার রিসাদের সিগনেচার করা। শুধু পেপারটা দিলে নাহয় প্রেগন্যান্সির রিপোর্ট দিয়ে রিসাদের সিদ্ধান্ত বদলাতে পারতো দীপ্তি, কিন্তু রিসাদ তো কয়েক কদম এগিয়ে গেছে। রিসাদকে বাবা হবার সুসংবাদ দেয়ার ইচ্ছেটা হারিয়ে গেছে দীপ্তির। সারা রাত বসেই কাটিয়েছে। রিসাদ পেপার দিয়েই চলে গেছিলো আর বলেছিল, `ডিভোর্স পেপারে আমি সাইন করে দিয়েছি, তুমিও করে দিও। আর এসে যেনো তোমাকে এ বাড়িতে দেখতে না পাই।`
বুধবার, ১৩ এপ্রিল ২০২২, ১৮:৫৯
মুখোশ (দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব)
দুই. মিনা নামের মেয়েটি ছিল উপজাতীয়। দেখতে একেবারে বাচ্চা বয়সী। ইংরেজিতে মাস্টার্স। সে হঠাৎ না বলে-কয়ে রিজাইন লেটার দিয়ে দিল। কলিগদের কাওকে জানায়নি। মেয়েটির পিছনে ছুক ছুক করে লেগে থাকতো গোলাপ। ৫টা পর্যন্ত অফিস, কিন্তু বেচারাকে নিজের রুমের মধ্যে আটকে রাখতো রাত ৭টা-৮টা পর্যন্ত। অফিসের কেও ৫টার পর থাকতো না। বোঝাই যাচ্ছিল বেচারা অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল। রিজাইন লেটার দিয়ে মেয়েটি কাওকে কোন কথা না বলে বিদায় হয়ে চলে যায়। ঠিক এভাবে ৬ মাস থেকে এক বছরের মধ্যে বিদায় হয়েছে আরও ৪ জন, তার মধ্যে একজন ছেলেও ছিল। সবাই মাস্টার্স এবং কাজের দিক থেকে সর্ববিষয়ে ছিল সুদক্ষ। গোলাপটা কি শুরু করেছে এসবÑ ভেবে পায় না খালেদ। হঠাৎ একই ঘটনা ঘটলো নীলাদির বেলায়। সকাল বেলা এসে কালো মুখে বললেন, আমিও রিজাইন লোটার দিচ্ছি আজ। আপনারা আমার অপরাধ থাকলে ক্ষমা করে দেবেন। খালেদদের কারও মুখে কোন কথা নেই। তিনিও চলে গেলেন। মজার ব্যাপার হলো বস আপা নিজের ঘনিষ্ট এই নীলাদিকে ডেকে একটি বারের জন্যও প্রশ্ন করলেন না যে, কেন সে রিজাইন দিচ্ছে। কথা বলতেই সময় দিলেন না তাকে। একই ঘটনা ঘটেছে অন্যান্যদের বেলায়ও।
বুধবার, ১৩ এপ্রিল ২০২২, ১৮:০৫
মুখোশ (প্রথম পর্ব)
তিনুর মন্তব্য শুনে চমকে উঠলো খালেদ। উদাসকণ্ঠে ও বললো, ‘যদি দূরে কোথাও চলে যেতে পারতাম, যেখানে থাকবে শুধু প্রকৃতি আর প্রকৃতি। দিগন্ত জুড়ে শুধু সবুজ, পাহাড়, পাখি আর অবারিত নীল আকাশ। সেখানে এই সভ্যতার জটিলসব মানুষের দরকার নেই। বিদ্যুৎ, গাড়ি-বাড়ি, কম্পিউটার, ইন্টারনেট এসবের কিচ্ছু দরকার নেই। সবকিছু থেকে দূরে কোথাও যেতে পারলে ভাল হতো। প্রকৃতিকে সঙ্গী করে যদি ঘর বাঁধতে পারতাম! হোক না সে আদিম যুগ। আফসোস নেই। পাহাড়-পর্বত আর সবুজ প্রকৃতির সঙ্গে মিতালি করে গাছে গাছে থাকতে হলেও মন্দ হতো না। তবু তো জটিলতা থেকে মুক্ত বিহঙ্গে দাঁড়াতে পারতাম!’ ঠিক এমন ভাবনাটাই ক’দিন ধরে ভাবছিল খালেদ। হুবহু একই ভাবনা কী করে ওর মধ্যে এলো! একি টেলিপ্যাথি? নাকি কঠিন জ্বর থেকে বেঁচে উঠার উপলব্ধি? ঠিক মেলাতে পারলো না খালেদ। তবে নিজের মনের কথাটা অবিকল তিনুর মুখ দিয়ে বেরিয়ে আসবেÑ ভাবতে পারেনি। ইদানিং অদ্ভুৎ একটা ভাইরাস জ্বর ছড়িয়ে পড়েছে। যাকে ধরছে তার জীবনের সাধ মিটিয়ে দিচ্ছে। জ্বর হলে কতো ওষুধ রয়েছে, খেলেই অনেকটা ভাল হয়। কিন্তু এই জ্বরে কিছুই হয় না। কোন ওষুধ কাজ করে না। খালেদ একসঙ্গে তিনটা করে নাপা খেয়েছে। কোন কাজও হয়নি, প্রভাবও পড়েনি। এমনকি আর কোন ওষুধেও কাজ হয়নি। ডাক্তাররা ব্যর্থ। পুরো সাতদিন বিছানায় শরীরের উপর জীবন আর মৃত্যু পাঞ্জা লড়েছে। কতোবার জ্ঞান হারাতে হয়েছে, কোমায় পর্যন্ত চলে যেতে হয়েছে কয়েকবার। সেইসঙ্গে যন্ত্রণা! উহ্ সেকি ভোলা যায়! যমের হাতে পড়া। খালেদ অনেক জ্বর দেখেছে, কিন্তু এ জ্বর লাফিয়ে এক শ’ চার ডিগ্রিতে দাঁড়িয়ে থাকেÑ এমন কখনও হয়নি। ঠিক একই সময় তিনুও এই জ্বরে পড়েছিল। এখন সুস্থ’র দিকে। তবে অসম্ভব রকমের ঘাম আর ঘুম অস্থির করে ফেলছে। কিন্তু, অফিস তো আর এসব মানবে না। কতোদিন আর আর ছুটি মেলে? মেলেনা। তাই অফিসে এসে খালেদেরও মনে হচ্ছিল সব কিছু থেকে দূরে কোথাও হারিয়ে যেতে পারলে মন্দ হতো না।
শনিবার, ২ এপ্রিল ২০২২, ২২:৩৩
অন্তঃসত্ত্বা
গত কয়েকদিন ধরে শীতের খুব জোরালো প্রভাব পড়েছে। ভোরে কুয়াশা আর গোধুলীবেলায় দূরন্ত হিমেল হাওয়া শরীরের সবটায় যেন স্পর্শময় কাঁপুনি দিয়ে অনুভূতির জানান দিয়ে যায়, শীত এসেছে। যদিও প্রকৃতির রূপের পরিবর্তন দেখতে চাইলে গ্রামীন পরিবেশে শীতের শুরুটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ অবস্থায় বিরাজমান; এখানকার মেঠোপথ, নদীর স্থির জলে ডিঙ্গি নৌকায় ভেসে বেড়ানো, ফসলের খেত, শিউলি ফুলের মনমাতানো গন্ধ, হাসনাহেনার মাদকতাময় সুবাস সবকিছু মিলিয়ে প্রকৃতির এক অনন্য নৈসর্গিক সৌন্দর্য দর্শন।
মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০৬:১৪
অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস
ঢাকা থেকে অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস ট্রেনে বাড়ি ফিরছিলাম। বাংলাদেশ রেলওয়ের যে অবস্থা, তাতে আর যা-ই বলি এটাকে যাত্রীসেবা বলা যাবে না। ট্রেনটির শোভন চেয়ারের গায়ে লেখা‘আপনার আস্থাই আমাদের অনুপ্রেরণা : বাংলাদেশ রেলওয়ে’। লেখাটি যথার্থ মনে করতে হবে। কারণ যাত্রীদের তো রেল বিভাগের ওপর আস্থাই নেই, তাই অনুপ্রেরণাও সে রকমই। আর যে রকম অনুপ্রেরণা, সেবাও সে রকম।
শুক্রবার, ১২ নভেম্বর ২০২১, ১৮:৩৪
আমি তার প্রেমে পড়েছিলাম
কি বলতে কি বলেছিলাম সেটা এখন আর আমার মনে নেই। শুধু মনে আছে মেয়েটিকে প্রথম দেখাতে-ই ওকে বলেছিলাম, তুমি অনেক সুন্দরী। তোমাকে দেখতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগছে। একথা বলার পর মেয়েটি আমার সামনে একদম পাথরের মূর্তির মতো শক্ত হয়ে গিয়েছিল। আমি ওর এমন মূর্তির রূপ দেখে মনে মনে ভয় পেয়েছিলাম; আবার কিনা আমাকে ধমক দিয়ে বলে, আপনাকে আমি অনেক ভালো মনে করেছিলাম। আপনি এমন অসভ্যের মতো কথা বলবেন, তা বুঝতে পারিনি।
শুক্রবার, ১২ নভেম্বর ২০২১, ০০:৩১
শ্রাবণ অশ্রুতে ভেজে মন
শনিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২১, ০৪:৪৪
সর্বশেষ
পাঠকপ্রিয়