ছবিঃ টোকিও হানেদা ডট কম
জাপানের স্কুলগুলো থেকে সিওই লেটার পেয়েও এখন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা কিংবা অষ্ট্রেলিয়ার দিকে পাড়ি জমানোর উদ্দেশ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছেন অনেক বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রী। জানা গেছে, দীর্ঘদিন জাপানের জন্য অপেক্ষা করতে করতে তাদের মধ্যে মানসিক চাপ পড়ার কারনেই এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তারা। যাদের মধ্যে একটি বড় অংশ করোনার এই সময়ে ইংরেজি ভাষার উপর দক্ষতা অর্জন করতে আইইএলটিএস (IELTS) এর কোর্সগুলোও সম্পন্ন করে নিয়েছেন ইতোমধ্যেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অপেক্ষাকৃত ছাত্র-ছাত্রীদের একটি বড় অংশ জাপানের স্কুলগুলোতে তাদের বাৎসরিক বেতনও পাঠিয়ে দিয়েছেন এই করোনাকালীন সময়েও। যাদের মধ্য থেকেও অনেকে এখন এ টাকা ফেরত নেয়ার বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছেন সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে।
আমাদের বাংলাদেশ প্রতিনিধি এ বিষয়ে বাংলাদেশে গড়ে উঠা জাপানে ষ্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে কাজ করেন এমন কোচিং সেন্টারগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ধীরে ধীরে বাংলাদেশ থেকে জাপানে ষ্টুডেন্টদের যে চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছিল তা এখন হুমকির মুখে। অনেক শিক্ষার্থীই জাপানের বিকল্প দেশগুলো নিয়ে জানার চেষ্টা করছেন।
কোচিং সেন্টারগুলো থেকে আরো জানা যায়, করোনাতে জাপান প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার কারণে অনেক ছাত্র-ছাত্রীর পড়াশোনাতে ব্যাঘাত ঘটেছে। তারা বলেন, যারা বিদেশে পড়াশোনা করার দৃঢ় প্রত্যয় নেয় তাদের অনেকেই আর এখানকার (বাংলাদেশের) পড়াশোনা চালাতে চায় না।
এ নিয়ে ঢাকার একটি জাপানিজ ভাষা কোচিং সেন্টারের কর্ণধার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বানিজ্যিকভাবে আমরা ভীষন ক্ষতিগ্রস্থ। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের এমন হতাশা দেখে আমরা তাদের আশার বানীও শোনাতে পারছি না। কারন আমরা কেউ জানি না, কবে নাগাদ জাপান সরকার এমন নিষেধাজ্ঞা তুলে নিবে।
জাপানের বাইরে যেসব ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ইউরোপ-আমেরিকা নিয়ে কাজ করে তাদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাপানী ভাষা শিখেছেন এমন অনেক ছাত্র-ছাত্রীই তাদের এখানে এসেছেন ইউরোপ-আমেরিকাতে যাবার বিষয়ে কথা বলতে। যারমধ্যে অনেকেই তাদের প্রসেসিংগুলোও শুরু করে দিয়েছন বলে জানা যায় বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে।
অনুসন্ধান করে জানা যায়, বাংলাদেশ থেকে কম খরচে ইউরোপে নিয়ে যাবে এমন কিছু দালালও জাপানে আসার আগ্রহী ছাত্র-ছাত্রীদের উপর সুযোগ নিচ্ছে। যার কারণে শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশের উচ্চশিক্ষা অর্জনের গতিপথ থেমে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে নুরুল কবির নামে একজন ছাত্রের সঙ্গে কথা বলেছেন টোকিও বাংলা নিউজ প্রতিনিধি। নুরুল কবির জানান, জাপানের ওসাকা শহরের একটি স্কুল থেকে তিনি সিওই লেটার পেয়েছেন কিন্তু তিনি এখন আর জাপানের জন্য অপেক্ষা করতে রাজি নন। কারন তিনি জানেন না, কবে নাগাদ এর সমাধান হবে।
নুরুল কবির বলেন, জাপানের প্রতি ভালবাসা থাকলেও বাস্তবতার বাইরে আমি নই। তাই ইতোমধ্যেই আমার এক বন্ধুর মাধ্যেমে আমি ইউরোপে প্রবেশ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
গত কয়েক বছর আগে জাপান সরকার বাংলাদেশ থেকে দক্ষজনশক্তি আমদানি করবে এমন ঘোষনা দেয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে জাপানিজ ভাষাসহ কাজের ধরণ, নিয়মাবর্তিতা, সামাজিকতা ইত্যাদি সম্পর্কে শিক্ষাদানে ট্রেনিং সেন্টার খোলা হয় ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে। যেখানে হাজার হাজার দক্ষতা সম্পন্ন শিক্ষার্থী ভর্তি হতে দেখা যায়। জানা গেছে, এসব ট্রেনিং সেন্টার থেকে অনেক শিক্ষার্থী তাদের কোর্স সম্পন্ন করলেও জাপান আসতে না পেরে তাদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। তাদের অনেককেই বেকার হয়ে ভবঘুরে জীবন-যাপন পার করছে বলেও জানা গেছে।
আর এ